1

1 আমি যাকোব, ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দাস, নানা দেশে ছড়িয়ে থাকা ঈশ্বরের বারো গোষ্ঠীর লোকদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি৷

2 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরা যখন নানারকম প্রলোভনের মধ্যে পড়, তখন তা মহা আনন্দের বিষয় বলে মনে কর৷

3 একথা জেনো, এই সকল বিষয় তোমাদের বিশ্বাসের পরীক্ষা করে ও তোমাদের ধৈর্য্যগুণ বাড়িয়ে দেয়৷

4 সেই ধৈর্য্যগুণকে তোমাদের জীবনে পুরোপুরিভাবে কাজ করতে দাও৷ এর ফলে তোমরা নিখুঁত ও সম্পূর্ণ হয়ে উঠবে এবং কোন বিষয়ে তোমাদের কোন অভাব থাকবে না৷

5 তোমাদের কারোর যদি প্রজ্ঞার অভাব হয়, তবে সে তার জন্যে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করুক৷ ঈশ্বর দয়াবান; তিনি সকলকে উদারভাবে এবং আনন্দের সঙ্গে দেন৷ অতএব ঈশ্বর তোমাদের প্রজ্ঞা প্রদান করবেন৷

6 কিন্তু ঈশ্বরের কাছে চাইতে হলে কোনরকম সন্দেহ না রেখে সম্পূর্ণ বিশ্বাসের সঙ্গেই তা চাইতে হবে, কারণ য়ে সন্দেহ করে, সে ঝোড়ো হাওয়ায় আলোড়িত উত্তাল সমুদ্র তরঙ্গের মতো৷

7

8

9 য়ে বিশ্বাসী ভাই গরীব, সে গর্ব অনুভব করুক, কারণ ঈশ্বর তাকে আত্মিকভাবে উন্নত করেছেন৷

10 য়ে বিশ্বাসী ভাই ধনী, সে গর্ব বোধ করুক, কারণ ঈশ্বর তাকে দেখিয়েছেন য়ে সে আত্মিকভাবে দরিদ্র৷ ধনী ব্যক্তি একদিন বুনো ফুলের মতো ঝরে যাবে৷

11 সূর্য় ওঠার পর তার তাপ ক্রমশঃ বেড়েই যায়, তাপে তৃণ ঝলসে যায় ও ফুল ঝরে যায়৷ ফুল সুন্দর হলেও তার রূপের বাহার বিলীন হয়ে যায়, তেমনি ঘটে ধনী ব্যক্তির জীবনে৷ তার কাজের পরিকল্পনাকালেই সে হঠাত্ মৃত্যুমুখে পড়ে৷

12 পরীক্ষার সময়ে য়ে ধৈর্য্য ধরে ও স্থির থাকে সে ধন্য, কারণ বিশ্বাসের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে ঈশ্বর তাকে পুরস্কার স্বরূপ অনন্ত জীবন দেবেন৷ ঈশ্বরকে যাঁরা ভালবাসে তাদের তিনি এই জীবন দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷

13 কেউ যখন প্রলুদ্ধ হয় তখন য়েন সে না বলে, ‘ঈশ্বর আমাকে প্রলুদ্ধ করেছেন৷’ মন্দ ঈশ্বরকে প্রলোভিত করতে পারে না এবং ঈশ্বরও নিজে কাউকে প্রলোভনে ফেলেন না৷

14 প্রত্যেক মানুষ তার নিজের মন্দ অভিলাষের দ্বারা প্রলোভিত হয়৷ তার মন্দ ইচ্ছা তাকে পাপের দিকে টেনে নিয়ে যায় এবং ফাঁদে ফেলে৷

15 এই মন্দ ইচ্ছা গর্ভবতী হয়ে পাপের জন্ম দেয় এবং পাপ পূর্ণতা লাভ করে মৃত্যুর জন্ম দেয়৷

16 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, এ ব্যাপারে তোমরা প্রতারিত হযো না৷

17 সমস্ত ভাল ও নিখুঁত দান স্বর্গ থেকে আসে, কারণ পিতা ঈশ্বর যিনি স্বর্গীয় আলো সৃষ্টি করেছিলেন তিনি সর্বদা একই আছেন; তাঁর কোনও পরিবর্তন হয় না৷

18 ঈশ্বর তাঁর নিজের ইচ্ছায় সত্যের বাক্য়ের মধ্য দিয়ে আমাদের জীবন দিয়েছেন৷ তিনি চান য়েন তাঁর সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে আমরা অগ্রগন্য হই৷

19 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তোমরা শ্রবণে সত্বর কিন্তু কথনে ধীর হও৷ চট করে রেগে য়েও না৷

20 ক্রোধ কখনই ঈশ্বরের প্রত্যাশা অনুযাযী সত্ জীবন যাপনের সহায়ক হতে পারে না৷

21 তাই তোমাদের জীবন থেকে সব রকমের অপবিত্রতা ও যা কিছু মন্দ যা তোমাদের চারপাশে রয়েছে তাকে দূরে সরিয়ে দাও; আর নম্রভাবে ঈশ্বরের শিক্ষা গ্রহণ কর যা তিনি তোমাদের হৃদয়ে বপন করেছেন৷

22 ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে কাজ কর, শুনে কিছু না করে বসে থাকলে চলবে না৷ শুধুমাত্র ঈশ্বরের বাক্য়ের শ্রোতা হয়ে নিজেকে ঠকিও না৷

23 যদি কেউ শুধুমাত্র ঈশ্বরের বাক্য়ের শ্রোতাই হয় আর সেই মতো কাজ না করে, তবে সে এমন একজন লোকের মতো য়ে আয়নার দিকে তাকায়,

24 নিজেকে দেখে এবং চলে যাবার সঙ্গে সঙ্গে সে নিজে কেমন দেখতে তা ভুলে যায়৷

25 কিন্তু সেই ব্যক্তি প্রকৃত সুখী য়ে ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা, যা মানুষের কাছে মুক্তি নিয়ে আসে তা ভালভাবে অধ্যয়ন করতে থাকে ও তা পালন করে এবং যা শ্রবন করে তা ভুলে যায় না, এই বাধ্যতা তাকে সুখী করে তোলে৷

26 যদি কোন ব্যক্তি নিজেকে ধার্মিক মনে করে, অথচ নিজের মুখ না সামলায় তবে, সে নিজেকে ঠকায়, তার ‘ধার্মিকতা’ মূল্যহীন৷

27 য়ে ধার্মিকতা ঈশ্বর বিশুদ্ধ ও খাঁটি হিসেবে অনুমোদন করেন তা হল অনাথ ও বিধবাদের দুঃখ কষ্টে দেখাশোনা করা এবং নিজেকে পৃথিবীর মন্দ প্রভাব থেকে দূরে রাখা৷

2

1 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরা আমাদের মহিমাময়প্রভুযীশু খ্রীষ্টেতেবিশ্বাসী, সুতরাং তোমরা পক্ষপাতিত্ব করো না৷

2 মনে কর কোন ব্যক্তি হাতে সোনার আংটি ও পরনে দামী পোশাক পরে তোমাদের সভায় এল৷ সেই সময় একজন গরীব লোকও ময়লা পোশাক পরে সেখানে এল,

3 যদি তোমরা সেই দামী পোশাক পরা মানুষটির দিকে বিশেষ নজর দিয়ে বল, ‘এই ভাল চেয়ারে বসুন;’ কিন্তু সেই গবীর লোকটিকে বল, ‘তুমি ওখানে দাঁড়াও!’ কিংবা ‘তুমি আমার এই পায়ের কাছে মাটিতে বস!’

4 তাহলে তোমরা কি করছ? এক ব্যক্তি থেকে আরেকজনকে কি বেশী সম্মানের পাত্র বলে বিচার করছ না? তোমরা কি মন্দ মাপকাঠিতে লোকের বিচার করছ না?

5 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা শোন, সংসারে যাঁরা গরীব, ঈশ্বর কি তাদের বিশ্বাসে ধনী হবার জন্য মনোনীত করেন নি? যাঁরা ঈশ্বরকে ভালবাসে তাদের য়ে রাজ্য দেবেন বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেই রাজ্যের অধিকারী হবার জন্য এই গরীব লোকদের কি তিনি বেছে নেন নি?

6 কিন্তু তোমরা সেই গরীব লোকটিকে কোন সম্মান দিলে না৷ ধনীরাই কি তোমাদের দাবিয়ে রাখে না? তারাই কি তোমাদের আদালতে টেনে নিয়ে যায় না?

7 য়ে উত্তম নাম (যীশু) তোমাদের ওপর কীর্ত্তিত হয়েছে, তোমরা য়াঁর আপনজন, ধনীরাই কি সেই সম্মানিত নামের নিন্দা করে না?

8 সমস্ত বিধি-ব্যবস্থার উর্দ্ধে একটি বিধি আছে৷ এই রাজকীয় ব্যবস্থাটি শাস্ত্রে রয়েছে: ‘তোমরা প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবাসবে৷’ তোমরা যদি সেই বিধি-ব্যবস্থা পালন কর তবে ভালই করছ৷

9 কিন্তু তোমরা যদি কারোর প্রতি পক্ষপাতিত্ব কর তবে তোমরা পাপ করছ; আর এই রাজকীয় ব্যবস্থা তোমাদের ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা ভঙ্গকারী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত করবে৷

10 কেউ যদি সমস্ত ব্যবস্থা পালন করে ও তার মধ্যে কেবল যদি একটি ব্যবস্থা পালন করতে ব্যর্থ হয়, তবে সে সমস্ত ব্যবস্থা লঙঘন করার দোষে দোষী সাব্যস্ত হয়৷

11 ঈশ্বর বলেছেন, ‘ব্যভিচার করো না৷’ আবার তিনিই বলেছেন, ‘নরহত্যা করো না৷’ এবার তুমি যদি ব্যভিচার না করে নরহত্যা কর, তাহলেও তুমি একজন ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা ভঙ্গকারী৷

12 য়ে ব্যবস্থা তোমাদের স্বাধীন করেছে তারই দ্বারা তোমাদের বিচার হবে, সুতরাং তোমরা য়ে কোন কাজ করার আগে ও কথা বলার পূর্বে এই সব স্মরণ কর৷

13 তোমাদের উচিত অপরের প্রতি দয়া করা, য়ে কারও প্রতি দয়া করে নি, ঈশ্বরের কাছ থেকে সে বিচারের সময় দয়া পাবে না৷ কিন্তু য়ে দয়া করেছে সে বিচারের সময় নির্ভয়ে দাঁড়াতে পারবে৷

14 আমার ভাই ও বোনেরা, যদি কেউ বলে আমার বিশ্বাস আছে, অথচ সেই অনুসারে কোন কাজ না করে, তা হলে তার বিশ্বাসের কোন মূল্য নেই৷ সেই বিশ্বাস কি তাকে রক্ষা করতে পারবে? কখনই না৷

15 ধর, কোন খ্রীষ্ট বিশ্বাসী ভাই বা বোনের অন্ন বস্ত্রের অভাব আছে,

16 এই অবস্থায় তাকে কোন সাহায্য না করে তোমরা যদি মুখে বল, ‘ঈশ্বর তোমার সহায় হোন, খেয়ে পরে থাক৷’ কিন্তু তার উপকার করতে ঐ প্রযোজনীয় দ্রব্য না দাও তবে ঐসব কথার কি মূল্য আছে?

17 ঠিক সেইভাবে বিশ্বাস অনুযাযী যদি কোন কাজ না হয় তবে সে বিশ্বাস মৃত বলেই গন্য হয়৷ সেই বিশ্বাস শুধু বিশ্বাসই, তার বেশী কিছু নয়৷

18 কিন্তু কেউ হয়তো বলবে, ‘তোমার বিশ্বাস আছে, আর আমার কাজ আছে৷ কাজ বাদ দিয়ে তোমার বিশ্বাস আমাকে দেখাও আর আমি আমার কাজের মধ্যে আমার বিশ্বাস তোমাকে দেখাব৷’

19 তুমি কি বিশ্বাস কর য়ে এক ঈশ্বর রয়েছেন? এমনকি ভূতরাও তা বিশ্বাস করে ও ভয়ে কাঁপে৷

20 ওহে মুর্খ মানুষ! কর্মবিহীন বিশ্বাস য়ে কোন কাজের নয়, তুমি কি চাও আমি তা প্রমাণ করি?

21 অব্রাহাম আমাদের পিতৃপুরুষ ছিলেন৷ যখন তিনি তাঁর পুত্র ইসহাককে যজ্ঞ বেদীর ওপর উত্‌সর্গ করেন, তখন তাঁর কাজের জন্য তিনি ঈশ্বরের কাছে স্বীকৃতি পান৷

22 কাজেই লক্ষ্য কর অব্রাহামের বিশ্বাস ও কর্ম একসাথে কাজ করেছিল এবং তাঁর বিশ্বাস কর্মের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়েছিল৷

23 এইভাবে শাস্ত্রের সেই বাক্য পূর্ণ হল৷ য়েখানে বলা হয়েছে, ‘অব্রাহাম ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখলেন৷ ঈশ্বরের কাছে সেই বিশ্বাস গ্রহণয়োগ্য হল এবং সেই বিশ্বাস অব্রাহাম ঈশ্বরের কাছে নির্দোষ গণিত হলেন;’ আর তাঁকে ‘ঈশ্বরের বন্ধু’ বলা হল৷

24 তাহলে তোমরা দেখলে য়ে মানুষ তার কাজের মাধ্যমেই ঈশ্বরের কাছে নির্দোষ বলে গণিত হয়, কেবলমাত্র তার বিশ্বাসের দ্বারা নয়৷

25 আর একটি দৃষ্টান্ত হিসাবে রাহবের কথা বলা য়েতে পারে৷ বেশ্য়া রাহব কি তার কাজের মাধ্যমেই ঈশ্বরের চোখে নির্দোষ গণিত হয় নি? সে গুপ্তচরদের (ঈশ্বরের লোক) লুকিয়ে রেখে পরে তাদের অন্য পথ দিয়ে নিরাপদে চলে য়েতে সাহায্য করেছিল৷

26 দেহের মধ্যে প্রাণ যখন থাকে না, তখন সেই দেহ য়েমন মৃত, তেমনি কর্মবিহীন বিশ্বাসও মৃত৷

3

1 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমাদের মধ্যে বেশী লোকের শিক্ষক হওয়ার জন্য চেষ্টা করার দরকার নেই, কারণ তোমরা জান য়ে আমরা শিক্ষক বলে অন্যদের থেকে আমাদের বিচার কঠোর হবে৷

2 কারণ আমরা সকলেই নানাভাবে অন্যায় করে থাকি৷ যদি কেউ তার কথাবার্তায় অসংযত না হয়, তবে সে একজন খাঁটি লোক, সে সব বিষয়ে নিজের দেহকে সংযত রাখতে পারে৷

3 ঘোড়াদের বশে রাখার জন্য, আমরা তাদের মুখে বলগা দিই এবং তার ফলে তাদের সমস্ত দেহকে আমরা আমাদের পছন্দমত য়ে কোনও দিকে পরিচালিত করতে পারি৷

4 আবার জাহাজের কথা ভাব, তারা কত প্রকাণ্ড, প্রচণ্ড বাতাসের মধ্যে দিয়ে চলে, অথচ ছোট্ট একটা হালের সাহায্যে নাবিক সেটাকে য়েদিকে ইচ্ছা সেদিকে নিয়ে যায়৷

5 তেমনি জিভও দেহের একটা ছোট অঙ্গ, তবু তা বড় বড় কথা বলে৷ দেখ আগুনের একটা ছোট ফুলকি কেমন করে এক বিরাট বনকে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়৷

6 জিভও তেমনি আগুনের ফুলকির মতো৷ আমাদের দেহের অঙ্গগুলির মধ্যে জিভ হল অধর্মের এক জগত, কারণ জিভ থেকেই নানা মন্দ আমাদের সমস্ত দেহে ছড়িয়ে পড়ে৷ নরকের আগুনে জিভ জ্বলে উঠে গোটা জীবনকে প্রভাবিত করে৷

7 মানুষ সব রকমের পশু-পাখী, সরীসৃপ ও সমুদ্রের প্রাণীকে দমন করে রাখতে পারে আর তাদের বশে রাখতে পারে;

8 কিন্তু কোন মানুষ জিভকে বশে রাখতে পারে না, এই জিভ সব সময়ই অস্থির, মন্দ ও মারাত্মক বিষে ভরা৷

9 এই জিভ দিয়েই আমরা কখনও আমাদের প্রভু ও পিতার প্রশংসা করি, আবার কখনও বা ঈশ্বরের সাদৃশ্যে সৃষ্ট মানুষকে অভিশাপ দিই৷

10 একই মুখ থেকে প্রশংসা ও অভিশাপ নির্গত হয়৷ ভাই ও বোনেরা, এমন হওযা উচিত নয়৷

11 একই উত্‌স থেকে কি কখনও মিষ্টি ও তেতো দুরকম জল নিঃসৃত হয়?

12 আমার ভাই ও বোনেরা, দ্রাক্ষা লতায় কি ডুমুর ফল ধরে? তেমনি নোনা জলের উত্‌স থেকে কি মিষ্টি জল পাওয়া যায়?

13 তোমাদের মধ্যে জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান কে? সে সত্ জীবনযাপন করে ও নম্রতার সাথে ভাল কাজ করে গর্বহীনভাবে তার বিজ্ঞতা প্রকাশ করুক৷

14 তোমাদের মনে যদি তিক্ততা, ঈর্ষা ও স্বার্থপরতা থাকে তাহলে তোমাদের জ্ঞানের বড়াই করো না; করলে তোমাদের গর্ব হবে আর এক মিথ্যা, যা সত্যকে ঢেকে রাখে৷

15 এই ধরণের ‘জ্ঞান’ যা ঈশ্বর থেকে লাভ হয় না তা পার্থিব, আত্মিক নয়, তা দিয়াবলের কাছ থেকে আসে৷

16 য়েখানে ঈর্ষা ও স্বার্থপরতা রয়েছে সেখানেই বিশৃঙ্খলা ও সব রকমের নোংরামি থাকে৷

17 কিন্তু য়ে জ্ঞান ঈশ্বর থেকে আসে তা প্রথমতঃ শুচিশুদ্ধ পরে শান্তিপ্রিয়, সুবিবেচক, বাধ্যতা, দয়া ও সত্ কাজে পূর্ণ, পক্ষপাত শূন্য ও আন্তরিক৷

18 যাঁরা শান্তির জন্য শান্তির পথে কাজ করে চলে, তারা উত্তম জিনিস লাভ করে যা যথার্থ জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে আসে৷

4

1 তোমাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ কোথা থেকে আসে তা কি তোমরা জান? তোমাদের দেহের মধ্যে য়ে সব স্বার্থপর লালসা যুদ্ধ করছে, সেই সবের মধ্য থেকেই আসে৷

2 তোমরা কিছু চাও কিন্তু তা পাও না, তখন খুন কর ও অপরকে হিংসা কর৷ কিন্তু তবুও তা পেতে পারো না, তাই তোমরা ঝগড়া কর, মারামারি কর৷ তোমরা যা চাও, তা পাও না, কারণ তোমরা ঈশ্বরের কাছে চাও না৷

3 অথবা চাইলেও পাও না কারণ তোমরা অসত্ উদ্দেশ্য নিয়ে চাও৷ তোমরা কেবল নিজেদের ভোগ বিলাসে ব্যবহারের জন্য জিনিস চাও৷

4 সুতরাং তোমরা ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত নও৷ তোমাদের জানা উচিত য়ে জাগতিক বস্তুগুলিকে ভালবাসার অর্থ হল ঈশ্বরকে ঘৃণা করা৷ তাই য়ে কেউ জগতের বন্ধু হতে চায় সে ঈশ্বরের শত্রু হয়ে ওঠে৷

5 তোমরা কি মনে কর য়ে শাস্ত্রের এইসব কথা অর্থহীন? শাস্ত্র বলে, ‘ঈশ্বর য়ে আত্মাকে আমাদের অন্তরে বাস করতে দিয়েছেন, তা চায় য়েন আমরা শুধু তাঁরই হই৷’

6 কিন্তু ঈশ্বরের অনুগ্রহদান তার থেকেও বড় বিষয়৷ তাই শাস্ত্রে লেখা আছে: ‘ঈশ্বর অহঙ্কারীদের প্রতিরোধ করেন, কিন্তু যাঁরা নম্র তিনি তাদের অনুগ্রহ প্রদান করেন৷’

7 তাই তোমরা নিজেদের ঈশ্বরের কাছে সঁপে দাও৷ দিয়াবলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও, তাহলে সে তোমাদের ছেড়ে পালিয়ে যাবে৷

8 তোমরা ঈশ্বরের নিকটবর্তী হও, তাতে তিনিও তোমাদের নিকটবর্তী হবেন৷ পাপীরা, তোমাদের জীবন থেকে পাপ দূর করো৷ তোমরা একই সাথে ঈশ্বরের ও জগতের সেবা করতে চেষ্টা করছ৷ তোমাদের অন্তঃকরণ পবিত্র কর৷

9 তোমরা শোক কর, দুঃখে ভেঙ্গে পড় ও কাঁদ, তোমাদের হাসি কান্নায় পরিণত হোক্, আর আনন্দ, বিষাদে পরিণত হোক্৷

10 তোমরা প্রভুর সামনে নত হও, তাহলে তিনি তোমাদের উন্নীত করবেন৷

11 ভাই ও বোনেরা, তোমরা পরস্পরের বিরুদ্ধে নিন্দা করা বন্ধ কর৷ যদি কেউ তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কথা বলে অথবা তার ভাইয়ের বিচার করে, সে বিধি-ব্যবস্থার বিরুদ্ধেই কথা বলে এবং ব্যবস্থার বিচার করে৷ যদি তুমি বিধি-ব্যবস্থার বিচার কর, তাহলে তুমি আর তার পালনকারী হলে না বরং বিধি-ব্যবস্থার বিচারক হলে৷

12 একমাত্র ঈশ্বরই বিধি-ব্যবস্থা দিতে পারেন ও বিচার করতে পারেন৷ একমাত্র তিনিই বিচারকর্তা, কেবল তিনিই আমাদের রক্ষা করতে বা বিনষ্ট করতে পারেন৷ তাই অন্য কারুরই বিচার করা তোমার অধিকারে নেই৷

13 তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ বলে, ‘আজ বা কাল আমরা এমন শহরে যাব, য়েখানে গিয়ে এক বছর থাকব আর ব্যবসা করে লাভ করব৷’

14 একটু ভেবে দেখ, কাল কি হবে তা তুমি জান না৷ তোমাদের প্রাণ তো কুয়াশার মতো, ক্ষণকালের জন্য তা দৃষ্টিগোচর হয়, তারপর উবে যায়৷

15 তাই তোমাদের বলা উচিত, ‘প্রভুর ইচ্ছা হলে, আমরা বেঁচে থাকব আর এটা ওটা করব৷’

16 কিন্তু এখন তোমরা নিজেদের বিষয়ে নিজেরাই অহঙ্কার ও দর্প করছ; আর এই প্রকারের সব অহঙ্কার অন্যায়৷

17 মনে রেখো, য়ে সত্ কর্ম করতে জানে অথচ তা না করে, সে পাপ করে৷

5

1 ধনী ব্যক্তিরা শোন, তোমাদের জীবনে য়ে ঘোর দুর্দশা আসছে, তার জন্য তোমরা কাঁদ ও হাহাকার কর৷

2 তোমাদের ধন পচে যাবে, তার কোন মূল্যই থাকবে না৷ তোমাদের পোশাক পোকায় কাটবে, তোমাদের সোনা ও রূপোয় মরচে ধরবে৷ সেই মরচে প্রমাণ করবে য়ে তোমরা অন্যায় করেছ৷

3 আর সেই মরচে আগুনের মতো তোমাদের দেহের মাংস খেয়ে ফেলবে৷ তোমরা শেষের দিনের জন্য সম্পদ জমা করেছ৷

4 দেখ! য়ে মজুররা তোমাদের ক্ষেতে কাজ করেছিল তাদের তোমরা মজুরি দাও নি৷ তার জন্য তারা তোমাদের বিরুদ্ধে চিত্‌কার করছে৷ তারা তোমাদের ক্ষেতের ফসল কেটেছে, এখন তাদের সেই আর্তনাদ স্বর্গীয় বাহিনীর প্রভু ঈশ্বরের কানে পৌঁছেছে৷

5 এই পৃথিবীতে তোমরা ভোগ বিলাসে দিন কাটিয়ে প্রাণের লালসা মিটিয়েছ৷ বলি হবার দিনের জন্য তোমরা নিজেদের পশুর মতো মোটা করছ৷

6 ভাল লোকদের প্রতি তোমরা কোন দয়া দেখাও নি৷ তোমরা নির্দোষ লোকদের দোষী সাব্যস্ত করেছ এবং বধ করেছ, যদিও তারা তোমাদের বিরোধিতা করে নি৷

7 ভাই ও বোনেরা ধৈর্য্য ধর৷ প্রভু যীশু খ্রীষ্ট ফিরে আসবেন, তাঁর না আসা পর্যন্ত ধৈর্য্য ধর৷ মনে রেখো একজন চাযী তার ক্ষেতের মূল্যবান ফসলের জন্য অপেক্ষা করে; আর যতদিন তা প্রথম ও শেষ বর্ষণ না পায়, ততদিন সে ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করে৷

8 তোমাদের ধৈর্য্য ধরা দরকার, আশা ছেড়ে দিও না৷ প্রভু যীশু শীঘ্রই আসছেন৷

9

10 ভাই ও বোনেরা, দুঃখ ও কষ্টে কিভাবে ধৈর্য্য ধরতে হয় তার দৃষ্টান্তস্বরূপ সেই ভাববাদীদের অনুসরণ কর যাঁরা প্রভুর পক্ষে কথা বলেছিলেন৷

11 আমরা বলি যাঁরা জীবনে দুঃখ কষ্ট সহিষ্ণুতার সঙ্গে মেনে নেয় তারা ধন্য৷ তোমরা ইযোবের সহিষ্ণুতার কথা শুনেছ৷ তোমরা জান য়ে ইযোবের সমস্ত দুঃখ কষ্টের পর প্রভু তাঁকে সাহায্য করেছিলেন৷ এতে জানা যায় য়ে প্রভু করুণা ও দয়ায় পরিপূর্ণ৷

12 আমার ভাই ও বোনেরা, বিশেষ করে মনে রেখো, কোন প্রতিশ্রুতি করার সময়ে স্বর্গ, পৃথিবী বা অন্য কোন নাম ব্যবহার করে তোমার কথার সত্যতা প্রমাণ করতে দিব্যি করো না৷ তোমাদের ‘হাঁ,’ য়েন হাঁ-ই হয় আর ‘না’ য়েন ‘না’ থাকে৷ এটা কর যাতে তোমাদের বিচারের দায়ে পড়তে না হয়৷

13 তোমাদের মধ্যে কেউ কি কষ্ট পাচ্ছে? তবে সে প্রার্থনা করুক৷ কেউ কি সুখী? তবে সে ঈশ্বরের গুণকীর্তন করুক৷

14 তোমাদের মধ্যে কেউ কি অসুস্থ হয়েছে? তবে সে মণ্ডলীর প্রাচীনদের ডাকুক৷ তারা প্রভুর নামে তার মাথায় একটু তেল দিয়ে তার জন্য প্রার্থনা করুক৷

15 বিশ্বাসপূর্ণ প্রার্থনা সেই অসুস্থ ব্যক্তিকে সুস্থ করবে, প্রভুই তাকে সুস্থতা দেবেন; আর সে যদি পাপ করে থাকে তবে প্রভু তাকে ক্ষমা করবেন৷

16 তাই তোমরা পরস্পরের কাছে পাপ স্বীকার কর, পরস্পরের জন্য প্রার্থনা কর, য়েন সুস্থতা লাভ কর, কারণ ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তির প্রার্থনা খুবই শক্তিশালী ও কার্য়করী৷

17 এলীয় আমাদের মতোই সাধারণ মানুষ ছিলেন৷ তিনি প্রার্থনা করলেন য়েন বৃষ্টি না হয়, আর সাড়ে তিন বছর ধরে দেশে বৃষ্টি হল না৷

18 পরে তিনি আবার প্রার্থনা করলেন; আর আকাশ থেকে বৃষ্টি নামল এবং ক্ষেতে ফসল হল৷

19 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমাদের মধ্যে কেউ যদি সত্য থেকে দূরে সরে যায় আর যদি কেউ তাকে সত্যে ফিরে আসতে সাহায্য করে তবে

20 একথা মনে রেখো, য়ে পাপীকে মন্দ থেকে ফিরিয়ে আনে সে সেই ব্যক্তিকে অনন্ত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করবে এবং এই কাজের দ্বারা তার অনেক পাপ ক্ষমা হয়ে যাবে৷